মিযান
আমরা যা করি,যা বলি আল্লাহ সবই সংরক্ষণ করেন।আমাদের চলাফেরা,আচার-আচরণ,ভালোমন্দ,পাপ-পুণ্য সবকিছু লিখে রাখা হয়।একে বলে আমলনামা।আল্লাহর হুকুমে একদল ফেরেশতা সবকিছু লিখে রাখেন।এই ফেরেশতাদের বলা হয় কেরামান কাতেবিন।হাশরের দিন আমাদের পাপ ও পুণ্যের আমলনামা ওজন করা হবে।যার দ্বারা ওজন করা হবে তাকে বলে মিযান।মিযান অর্থ পরিমাপক যন্ত্র।ওজনে যাদের নেক কাজ বেশি হবে তারা জান্নাতের অধিকারী।যাদের পাপ বেশি হবে তারা হবে জাহান্নামী।
জাহান্নাম
জাহান্নাম হল চিরস্থায়ী কষ্টের স্থান।পৃথিবীতে যারা ইমান আনেনি,ভালো কাজ করেনি,তারা সেখানে চিরদিন বাস করবে।
কবর আরাম অথবা আজাব
কবর হল আখিরাতের প্রথম ধাপ।পৃথিবীতে যারা পাপ কাজ থেকে বিরত রয়েছে,তারা কবরের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে।তাদের জন্য কবর হবে আরাম ও শান্তিময় স্থান।জান্নাতের সাথে তাদের যোগাযোগ করে দেওয়া হবে।সেখানে তারা জান্নাতের শান্তি অনুভব করবে।
আর যারা পাপী তারা সঠিক উত্তর দিতে পারবে না।তাদের জন্য কবর হবে আজাবের স্থান।আজাব অর্থ শাস্তি।জাহান্নামের সাথে তাদের কবরের যোগাযোগ করে দেওয়া হবে।সেখানে তারা ভীষণ আজাব ভোগ করবে।আমরা পাপ কাজ থেকে বিরত থাকব।আল্লাহ তাআলা আমাদের কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন।
আখিরাত
প্রায় প্রতিদিনই আমরা বহু মানুষের মৃত্যুর সংবাদ শুনি।পাড়ার কেউ মারা গেলে আমরা খবর নিতে যাই।গোসল দিয়ে,কাফন পরিয়ে এক স্থানে জড় হয়ে মৃত ব্যক্তির জানাযা পড়ি।দোয়া করি।পরে কবরে দাফন করি।পৃথিবীতে কিছুই অমর নয়।যার জন্ম আছে তার মৃত্যুও আছে।মৃত্যুর পর এক জগৎ আছে।মৃত্যুর পরবর্তী জগৎকে বলা হয় আখিরাত।আখিরাত অর্থ পরকাল।
ওহি
নবি রাসুলগণ আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ।তাঁরা নিষ্পাপ।আল্লাহর নিকট থেকে অহির মাধ্যমে তাঁরা জ্ঞান লাভ করতেন।ওহি মানে আল্লাহর বাণী।হযরত জিবরাইল (আ) নবি রাসুলেগণের কাছে ওহি নিয়ে আসতেন।
রিসালাত
তাওহিদের পর ইসলামের দ্বিতীয় মৌলিক বিশ্বাস হচ্ছে রিসালাত।রিসালাত অর্থ বার্তাবহন।যে ব্যক্তি একজনের কথা অন্যজনের কাছে নিয়ে পৌঁছায়,তাঁকে বলা হয় বার্তাবাহক বা রাসুল।কিন্তু ইসলামের পরিভাষায় যিনি আল্লাহর বাণী তাঁর বান্দাদের কাছে নিয়ে পৌঁছান এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী তাদের সৎপথে পরিচালিত করেন তাঁকে বলা হয় নবি বা রাসুল।নবি-রাসুলের কাজ বা দায়িত্বকে বলা হয় রিসালাত।
হযরত মুহাম্মদ (স)
মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবি।তাঁর পর আর কোন নবি আসেননি।আসবেনও না।এজন্য তাঁকে বলা হয় খাতামুন্নাবিয়্যীন।খাতামুন্নাবিয়্যীন অর্থ সর্বশেষ নবি।
আল্লাহ সর্বশক্তিমান (َاللهُ قَدِ يُرً)
আমরা জানি,আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছু আল্লাহর শক্তির অধীন।আল্লাহ তাআলা কারো ভালো করতে চাইলে কেউ তার ক্ষতি করতে পারেনা।আর আল্লাহ কারো ক্ষতি করতে চাইলে কেউ তা রোধ করতে পারে না।আল্লাহ সর্বশক্তিমান।আল্লাহ বলেন,(ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইইন কাদীর) "নিশ্চয়ই তুমি সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।" (সূরা আলে ইমরান,আয়াত-২৬)
আল্লাহ সর্বশ্রোতা (َاللهُ سَمِيُعً)
আল্লাহ সব শোনেন।আমরা প্রকাশ্যে যা বলি,তা তিনি শোনেন।গোপনে যা বলি তাও তিনি শোনেন।আমরা মনে মনে যা বলি তাও তিনি শোনেন।তাঁর কাছে গোপন কিছুই নেই।আল্লাহ সর্বশ্রোতা।আল্লাহ তাআলা বলেন,(ইন্নাল্লাহা সামিউন আলিম) "নিশ্চয়ই আল্লাহ সব শোনেন ,সব জানেন।" (সূরা বাকারা,আয়াত-১৮১)
আল্লাহ অতি সহনশীল
আমরা অনেক সময় অপরাধ করি।আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘন করি।আল্লাহ তাআলা সাথে সাথে শাস্তি দেন না।আল্লাহ তাআলা যদি আমাদের অপরাধের জন্য সাথে সাথে শাস্তি দিতেন তাহলে আমরা কেউ বাঁচতে পারতাম না।আল্লাহ অতি সহনশীল।তিনি সহনশীলতা পছন্দ করেন।আল্লাহ তাআলা বলেন,"আল্লাহ সর্বজ্ঞানী,অতি সহনশীল।" (সূরা নিসা,আয়াত-১২)
আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল (َاللهُ غَفُوُرً)
মানুষ শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে অন্যায় করে ফেলে।পাপ কর্ম করে বসে।তখন যদি সে অনুতপ্ত হয়,ভুল স্বীকার করে,পাপ কাজ থেকে ফিরে আসে এবং আল্লাহ তাআলাএর কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চায় তবে আল্লাহপাক তাকে ক্ষমা করে দেন।আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল।
আমাদের ভুল হলে সাথে সাথে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইব।আল্লাহ আমাদের মাফ করে দেবেন।এরপর আমরা সাবধান থাকব,যেন আর কোন ভুল না হয়।
আল্লাহ সারা বিশ্বের পালনকর্তা
আল্লাহ তায়ালার আনুগত্যের নামই হল ইসলাম।এই আনুগত্যের জন্য প্রয়োজন আল্লাহ তায়ালার সত্তা ও গুনাবলি সম্পর্কে জানা ও ইমান আনা।
আল্লাহ আমাদের রব।আমাদের পালনকর্তা।আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।তিনিই সবকিছু লালনপালন করেন।গাছপালা,পশুপাখি,জীবজন্তু,সবারই খাদ্যের প্রয়োজন।লালনপালনের দরকার পড়ে।সবার খাদ্য এক রকম নয়।
আমরা সব সময় শ্বাস নেই ও শ্বাস ফেলি।শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়া কোন জীব বাঁচে না।শ্বাস ফেলার সময় এক প্রকার বিষাক্ত বায়ু বের হয়।এর নাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড।গাছ এই বায়ু গ্রহণ করে খাদ্য তৈরির উপাদান হিসেবে।আর আমাদের জন্য ছাড়ে অক্সিজেন।শ্বাস নেওয়ার সময় আমরা অক্সিজেন গ্রহণ করি।অক্সিজেন ছাড়া কোন জীব বাঁচতে পারে না।এ বিষয়ে গভীর চিন্তা করলে দেখা যায় আল্লাহর মহিমা কর বড়।আমাদের জন্য যা বিষ গাছপালার জন্য তা খাদ্য তৈরির উপাদান।গাছপালার মাধ্যমে আমরা অক্সিজেন,ফলমূল ও খাদ্য পাই।কতভাবে আল্লাহ আমাদের লালনপালন করেন।
পানির অপর নাম জীবন।পানি ছাড়া কোন জীব বাঁচতে পারেনা।পানি ছাড়া গাছপালাও বাঁচে না।প্রতিদিন আমাদের প্রচুর পানি ব্যবহার করতে হয়।
মাটির নিচে জমা পানি কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে আমরা পাই।এ পানি বিশুদ্ধ পানি।বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।নদনদী,খালবিল,পুকুরের পানি আমরা ব্যবহার করি।এসবের পানি যাতে বিশুদ্ধ থাকে আমরা সেদিকে খেয়াল রাখব।
ভাবতে অবাক লাগে,পরম করুণাময় আল্লাহ পানিচক্রের মাধ্যমে কেমন করে আমাদের প্রতিনিয়ত বিশুদ্ধ পানির জোগান দিয়ে চলেছেন।এ পানি,বৃষ্টি,নদীনালা,সাগর,মহাসাগর সবই আল্লাহর দান।
চন্দ্র-সূর্য,পশুপাখি,জীবজন্তু,গাছপালা,সাগর-মহাসাগর আসমান জমিনে সবকিছু তিনি আমাদের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন।সব সৃষ্টিকে তিনি মানুষের আজ্ঞাবহ করে দিয়েছেন।আমরা আল্লাহর আদেশ মত তাঁর সব নিয়ামত ভোগ করব।আর একমাত্র তাঁরই আনুগত্য করব।তাঁরই শোকর আদায় করব। আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।(সব প্রসংসা একমাত্র আল্লাহর,যিনি সারা বিশ্বের পালনকর্তা।)
আল্লাহ তায়ালার পরিচয়
আমাদের জানতে হবে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী জীবনযাপন করার সঠিক পথ কোনটি।কী কী কাজ আল্লাহ পছন্দ করেন,যা আমরা করব?আর কোন কোন কাজ অপছন্দ করেন,যা থেকে আমরা দূরে থাকব।এ উদ্দেশ্যে আল্লাহর আইন ও বিধানের জ্ঞান অর্জন করা আমাদের জন্য ফরজ।আল্লাহর বিধান আছে কুরআন মাজিদে।
আমাদেরকে আরও জানতে হবে,আল্লাহর ইচ্ছার বিরোধী পথে চলার পরিণাম কি?আর তাঁর আদেশ মেনে চলার পুরস্কারই বা কি?এ উদ্দেশ্যে আমাদেরকে কবর,কিয়ামত,হাশর,মিযান,জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে জানা ও ইমান থাকা অপরিহার্য।এ আলোচনায় যেসব বিষয় জানতে ও বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে,তারই নাম হচ্ছে ইমান।ইমান অর্থ বিশ্বাস স্থাপন।যে ব্যক্তি আল্লাহর একত্ব,তাঁর গুনাবলি,তাঁর বিধান এবং তাঁর পুরস্কার ও শাস্তি সম্পর্কে জানে ও অন্তরে বিশ্বাস করে তাকে মুমিন বলা হয়।আর ইমানের ফল হল মানুষকে আল্লাহর অনুগত বান্দা হিসেবে গড়ে তোলা।
এছাড়া আল্লাহ পাক মেহেরবানি করে মানুষেরই মধ্য থেকে এমন সব মহামানব সৃষ্টি করেছেন,যাঁদের তিনি দিয়েছেন নিজের গুনাবলি সম্পর্কে নির্ভুল জ্ঞান।আখিরাত সম্পর্কে জ্ঞান দান করেছেন।এরপর তাঁদের নির্দেশ দিয়েছেন অপর মানুষের নিকট এসব পৌঁছে দিতে।এরাই হচ্ছেন নবি রাসুল।তাঁদের জ্ঞান দানের জন্য আল্লাহ যে মাধ্যম ব্যবহার করেছেন,তার নাম ওহি।আর যে কিতাবে এ জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তাকে বলে আল্লাহর কিতাব।কুরআন মাজিদ আল্লাহর কিতাব।
আল্লাহ সর্বদ্রষ্টা ( اللهُ بَصِيُرً)
আমরা অনেক কিছুই দেখি না।কিন্তু আল্লাহতাআলা সবকিছু দেখেন।আমরা গোপনে যা করি তিনি তাও দেখেন।প্রকাশ্যে যা করি,তাও তিনি দেখেন।সাগরের তলদেশে,গভীর অন্ধকারে জীবাণুর মোট ক্ষুদ্র পোকার নড়াচড়াও তিনি দেখেন।তাঁর কাছে অদৃশ্য কিছুই নেই।আল্লাহ বলেন,(ইন্নাল্লাহা সামীউম বাসির) "নিশ্চয়ই আল্লাহ সব শোনেন,সব দেখেন।"
আল্লাহ তাআলার গুনাবলি
মহান আল্লাহর অনেকগুলো সুন্দর নাম আছে এগুলোকে আসমাউল হুসনা বলে।আল্লাহ পাকের গুণে নিজেকে গুণান্বিত করতে পারলে চরিত্র ভালো হয়।ভালো মানুষ হওয়া যায়।যেমন-আল্লাহ দয়ালু।তিনি সবাইকে দয়া করেন।আমরাও সবাইকে দয়া করব।আল্লাহ 'রব'।তিনি সকল সৃষ্টিকে লালন-পালন করেন।আমরাও তাঁর সৃষ্টিকে লালনপালন করব।আল্লাহ 'রাজ্জাক'।তিনি সবার খাদ্য দেন।আমরাও খাদ্য দিব।
কবরে সাওয়াল-জওয়াব
সাওয়াল-জওয়াব অর্থ প্রশ্ন এবং উত্তর।মৃত্যুর পর প্রত্যেক মানুষকেই সাওয়াল-জওয়াবের সম্মুখীন হতে হবে।কবরে দুজন ফেরেশতা আসেন এবং মৃত ব্যক্তিকে ৩ টি প্রশ্ন করেন।
১. মান রাব্বুকা- তোমার রব কে?
২. মা দীনুকা- তোমার দীন কি?
৩. মহানবি (স) কে দেখিয়ে বলা হবেঃ মান হাযার রাজুল?- এই ব্যক্তি কে?
নবি রাসুলের মূল শিক্ষা
হযরত আদম (আ) থেকে মহানবি (স) পর্যন্ত বহু নবি-রাসুল পৃথিবীতে এসেছেন।তাঁরা সকলেই আল্লাহর তাওহিদের কথা বলেছেন।কথায়,কাজে এবং আচার-ব্যবহারে তাঁরা ছিলেন আদর্শ ও চরিত্রবান।যারা তাঁদের আদর্শ গ্রহণ করেছে তারা নাজাত পেয়েছে।আল্লাহর রহমত লাভ করেছে।আর যারা তাঁদের বিরোধিতা করেছে,তাঁদের কথা মানে নি তারা হয়েছে ধ্বংস।
জান্নাত
জান্নাত হল চিরস্থায়ী সুখের স্থান।সেখানে কেবল শান্তি আর শান্তি।আনন্দ আর আনন্দ।পৃথিবীতে যারা ইমানদার ছিল,যারা ছিল ভালো তারা চিরদিনের জন্য সেখানে বাস করবে।জান্নাতে আছে আরামের সব ব্যবস্থা।মন যা চাইবে সেখানে তাই পাওয়া যাবে।
একজন মুসলিমের চরিত্র
তার চেয়ে বিশ্বস্ত আর কেউ হতে পারে না।কারণ সে কারো আমানত বিনষ্ট করে না।ন্যায়ের পথ থেকে মুখ ফেরায় না।কথা দিয়ে কথা রাখে,ভালো ব্যবহার করে।আর কেউ দেখুক বা না দেখুক,আল্লাহ তো সব কিছুই দেখছেন-এ ধারণা নিয়ে সে সবকিছুই করে ইমানদারির সাথে।এমন লোককে সবাই স্নেহ করে,সম্মান দেয়।
হাশর
বিশ্বজগত ধ্বংস হবার অনেক বছর পর আল্লাহ তাআলা সবাইকে পাপ পুণ্য বিচার করার জন্য পুনরায় জীবিত করবেন।সবাইকে সেদিন আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে।একে হাশর বলে।এদিন আমাদের সব কথা ও কাজের হিসাব দিতে হবে।যারা মুমিন,ভালো কাজ করেছে তারা নিরাপদে থাকবে।আর যারা ইমান আনে নি,তারা ভীষণ বিপদের সম্মুখীন হবে।তাদের কষ্টের সীমা থাকবে না।
কিয়ামত
এমন একদিন ছিল যখন এই নিখিল বিশ্ব এবং এর কোন কিছুই ছিল না।আল্লাহ পাক তাঁর মহান কুদরতে সব সৃষ্টি করেছেন।আবার মানুষের অবাদ্ধতা যখন চরমে পৌঁছাবে,আল্লাহর নাম নেয়ার মত একজন ও থাকবে না,সেদিন আল্লাহ এই বিশ্বজগত ধ্বংস করে দিবেন।একে কিয়ামত বলে।বিশ্বজগতের এরুপ পরিণতি বিজ্ঞানীরাও স্বীকার করেন।
ইমান
আল্লাহর আনুগত্যের জন্য ইমান প্রয়োজন।যেসব বিষয়ে জানতে ও বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে তারই নাম ইমান।যে ব্যক্তি আল্লাহর একত্ব,তাঁর গুনাবলি,তাঁর বিধান সম্পর্কে অন্তরে বিশ্বাস করে তাকে মুমিন বলে।
তাওহীদ
তাওহীদ অর্থ একত্ববাদ।এটি ইসলামের প্রথম মৌলিক বিশ্বাস।
নবী-রাসূল
পৃথিবীর প্রত্যেক এলাকার মানুষকে এই কথাগুলো শেখানোর জন্য নবী-রাসূল্গণ এসেছেন।তারা ছিলেন পথপ্রদর্শক।
আল্লাহ বলেন,
'প্রত্যেক জাতির জন্য পথপ্রদর্শক এসেছেন।'
হযরত আদম (আ) থেকে আমাদের মাহানবি (স) পর্যন্ত বহু নবী-রাসূল পৃথিবীতে এসেছেন।
আল্লাহ পালনকর্তা
চন্দ্র-সূর্য,পশু-পাখি,জীব-জন্তু,আলো-বাতাস,পাহাড়-পর্বত,গাছ-পালা,সাগর-মহাসাগর,আসমান জমিন সবকিছুই তিনি মানুষের কল্ল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন।সব সৃষ্টিকে তিনি মানুষের আজ্ঞাবহ করে দিয়েছেন।আমরা আল্লাহর আদেশমত তার সব নিয়ামত ভোগ করব।আর একমাত্র তারই আনুগত্য করব।
আল্লাহ
সবার আগে আমাদের প্রয়োজন আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্ব ও পরিচয় সম্পর্কে জানা ও ইমান আনা।কেননা মহান আল্লাহ আছেন এ সম্পর্কে যদি আমাদের পূর্ণ ইমান না থাকে তা হলে কি করে আল্লাহর আদেশ মেনে চলব?
সওয়াল-জওয়াব
কবরে মৃত ব্যক্তিকে তিনটি প্রশ্ন করা হবে?
১ তোমার রব কে?
২ তোমার দীন কী?
৩ মহানবী (স) কে দেখিয়ে বলা হবে-
এই ব্যক্তি কে?
আল্লাহর পরিচয়
আমরা জাতি,কাঠমিস্থি কাঠ দিয়ে চেয়ার টেবিল,খাটসব আরও অনেক কিছু তৈরি করে।রাজমিস্ত্রি ইটের ওপর ইট সাজিয়ে দালাঙ্কোঠা তৈরি করে।এসব কিছুই নিজে নিজে তৈরি হয় না।কেউ সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি হয় না।
আমাদের মাথার ওপর সুনীল আকাশ,মিটমিট তারা গ্রহ-উপগ্রহ,পৃথিবী থেকে তেরো লক্ষ গুণ বড় প্রখর সূর্য নিজে নিজেই কি সৃষ্টি হয়ে গেছে?
নবি-রাসূলের মূল শিক্ষা
নবি-রাসূলের মূল শিক্ষা ছিলঃ
১.তাওহিদঃ আল্লাহ এক ।তাঁর কোন শরীক নেই।
২.রিসালাতঃ আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে পৌঁছানো।
৩.দীতঃ আল্লাহর দেওয়া পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষকে জানানো।
৪.আখলাকত্রঃ চারিত্রিক গুণ এবং ভাল ব্যবহারের নিয়মকানুন শিক্ষাদান।
৫.আখিরাতঃ মৃত্যুর পরের জীবন সম্পর্কে জানানো।
৬ শরিয়াতঃ শরীয়াতের মাধ্যমে আমরা হালাল-হারাম ও জায়েজ-নাজায়েজের শিক্ষা প্রদান।